সিনিয়র বউয়ের ভালবাসা (পার্ট- ৩) | স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প | রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

সিনিয়র বউ

সিনিয়র বউয়ের ভালবাসা

পর্বঃ ৩

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প

আম্মু এলো আর বলল
আম্মুঃকইটা বাজে এখন?
আমিঃ৭:০০ টা। কেন?
আম্মুঃপড়াশুনা করতে হবে ত নাকি?
আমিঃআমি কি বাচ্চা ছেলে যে বারবার পড়ার কথা বলো?
আম্মুঃচুপ কর। আর রুমে গিয়ে বউমার কাছে পড়তে বস।
আমিঃকি?
আম্মুঃকানে শুনিস না?
আমিঃআমি পড়তে বসব তাও আবার সিমির কাছে? পড়াশুনা জানে ও?
আম্মুঃসবাই তোর মত না। আমার বউমা সবসময় ফাস্ট ক্লাস হয়ে এসেছে। কোনদিন দ্বিতিয় হয়নি আজ পর্যন্ত।
আমিঃচাপা মারা বন্ধ করো ত।
আম্মুঃচুপ হারামজাদা। আর যা গিয়ে পড়তে বস।
আমিঃহু। সবসময় শুধু বকা দাও তোমরা। কেউ ভালবাস না আমাকে।
ভাবিঃনাটকবাজি বন্ধ করে পড়তে বস। সিমি তোকে আজ থেকে পড়াবে । সিমি যদি তোর ব্যাপারে কোন নালিশ করেছে তাহলে তোর খবর আছে বলে দিলাম।
আমিঃভাবি তুমিও।
ভাবিঃসোজা কখায় কাজ হবে না তাই না? উঠ চল উঠ। (কান ধরে)
আমিঃভাবি লাগছে।
ভাবি আমাকে টানতে টানতে রুমে নিয়ে এলো।
ভাবিঃসিমি।
সিমিঃজ্বি ভাবি।
ভাবিঃনাও একে পড়তে বসাও।
সিমিঃআচ্ছা ভাবি বসাচ্ছি।
ভাবিঃশুনে রাখ কান খাড়া করে "যদি আমি জানতে পেরেছি সিমির সাথে বাজে ব্যাবহার করেছিস "তাহলে তোর চামড়া ছিলে নিব।(আমাকে ফিসফিস করে বলল)
আমি শুধু অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছি।
সিমিঃপড়তে বসেন এখন।
ভাবিঃতোমরা কি আপনি করে কথা বলো নাকি?
সিমিঃজ্বি।
ভাবিঃএখন থেকে তুমি করে ডাকবা।আর যদি রিফাত তোমায় কিছু বলে তাহলে আমাকে বলবা।
সিমিঃআচ্ছা।
ভাবিঃপড় তাহলে আমি নিচে গেলাম।
ভাবি চলে গেল।
আমি দরজা লক করলাম ।
সিমিঃচলো টেবিলে বসে পড়ো।
আমিঃআমি পড়ব না।
সিমিঃকেন?
আমিঃআমার ইচ্ছা। কি করবা তুমি?
সিমিঃভাবি ভাবি।
আমিঃসিমির মুখ চেপে ধরলাম।
আমিঃপাগল নাকি তুমি হ্যাঁ।
সিমিঃউমমম উমমম।
আমিঃওহ সরি।
(মুখ ছেড়ে দিয়ে)
সিমিঃএতজোরে কেউ মুখ চেপে ধরে।
আমিঃতুমি চেঁচ্লা কেন?
সিমিঃভাবি ত বলল।
আমিঃআইছে ভাবির চামচা।
সিমিঃহয়েছে। এখন টেবিলে গিয়ে বসে পড়ো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি ।
আমি টেবিলে বসলাম।
সিমির কাছে থাকলে কেমন যেন একটা প্রশান্তি পাচ্ছি। আজ সিমিকে স্পর্শ করে বুকটা জোরে ধুকপুক করছে।
তারপরেও মাঝে কি যেন একটা বাধা হয়ে আসছে।
সেটা হলো বৃষ্টির জন্য ।
গত এক বছর ধরে রিলেশনে আছি বৃষ্টির সাথে।
একটু হলেও মায়া জন্ম হয়েছে বৃষ্টির জন্য।
কিন্তু বৃষ্টির ফোন ইদানিং ওয়েটিং থাকছে।
নাহলে ফোন ধরছে না।
ধরলেও খুব একটা বেশি কথা বলেনা।
কোথাও ঘুরতে যেতে চাই না।
বৃষ্টির জন্য কেমন যেন লাগছে ।
বৃষ্টিকে ফোন দিলাম।
বৃষ্টিঃহ্যালো।
আমিঃআমাকে এভয়েড কেন করছ তুমি?
বৃষ্টিঃকই?
আমিঃতাহলে আগের মত কথা বলনা কেন?
বৃষ্টিঃ এমনি একটু টেনশনে আছি তাই।
আমিঃকিসের টেনশন?
বৃষ্টিঃআমার দশ হাজারটাকা খুব প্রয়জন। বাবার কাছেও নিতে পারছি না।কিছুদিন হলো টাকা নিয়েছি।
আমিঃআমি থাকতে এত টেনশন কর কেন? টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি।
বৃষ্টিঃহুম।
আমিঃআজকে যে ছেলেটার সাথে বাইকে করে ঘুরছিলে কে ছিল ওটা?
বৃষ্টিঃকাকাজিন হয়।
আমিঃও।
বৃষ্টিঃআচ্ছা বাই আম্মু ডাকছে।
টুট টুট টুট
বৃষ্টি নিজে থেকেই ফোন কেটে দিল।
কি আর করার?
টাকাটা বিকাশে পাঠিয়ে দিলাম।
এভাবে অনেক টাকাই বৃষ্টিকে দি।
সিমি চলে এসেছে।
সিমিঃকি হলো বই বের করো।
আমিঃহুম।
সিমিঃএগুলো মুখস্ত করো।
আমিঃএতগুলো কিভাবে মুখস্ত করব?
পাগল নাকি তুমি?
সিমিঃএখন আমি তোমার ম্যাডাম। আপনি করে আর সন্মান দিয়ে কথা বলো।
আমিঃহট?
সিমিঃযা বলছি তাই।আর রাগবে না।রাগকে কনট্রোল করতে শিখ।কিছু বললেই ভাবিকে বলে দিব কিন্তু।
আমিঃআমাকে কতক্ষন পড়াবেন?
সিমিঃকমপক্ষে চার ঘন্টা।
আমিঃকি?
সিমিঃহুম।
আমিঃদিনে কয়ঘন্টা?
সিমিঃচব্বিশ ৃঘন্টা।
আমিঃতারমানে আপনি চারঘন্টা আমাকে শাসন করবেন?
সিমিঃহুম।
আমিঃবাকি বিশঘন্টায় আপনার কি করব আমি সেটা কি জানেন?
সিমিঃভয় দেখাচ্ছ বেয়াদব ছেলে।
আমিঃকি বললেন? আবার বলেন দেখি?
সিমিঃভাবি। ভাবি আমাকে মারবে
আমিঃমারব না মারব না।চেঁচ্য়েন না িপ্লজ।
সিমিঃপড়ো তাহলে।
আমি পড়তে লাগলাম।
সিমি তার পড়া পড়ছে আর মাঝেমধ্যে আমার দিেক তাকাচ্ছে।
আমিঃম্যাডাম।
সিমিঃবলো।
আমিঃচা খাব একটু।
সিমিঃতুমি পড় আমি নিয়ে আসছি।
সিমি চা বানাতে গেল।
এই ফাঁকে আমি ফেসবুকে ঢুকে পড়লাম।
দুই ঘন্টা ধরে ফেসবুকে আসিনি ত মনে হচ্ছে কতকাল আসিনি।
মেয়েদের পিকে হাহা মারছি।
মজাই আলাদা ।
আমার হাত থেকে সিমি ফোন কেড়ে নিল।
সিমিঃকি হচ্ছে এটা?
আমিঃফেসবুক চালাচ্ছি।
সিমিঃসেটা ত দেখতেই পাচ্ছি। পড়ার সময় এই ফোন আমার কাছে থাকবে বুঝেছ?
আমিঃহুম।
রাত বারোটা পর্যন্ত আমাকে পড়াল।
মাঝখানে শুধু ডিনার করার সময় দিয়েছে।
বাবাগো মাথা নষ্ট হয়ে গেল।
বিছানায় শুয়ে পড়লাম।
আর সিমি সোফায়।
আমার কেন জানি খারাপ লাগছে সিমির জন্য।
মেয়ে হয়ে সোফায় শুয়ে আছে।
আমিঃসিমি ।
সিমিঃহুম বলো।
আমিঃতুমি ইচ্ছা করলে বিছানায় ঘুমাতে পার।
সিমিঃনা থাক। যেদিন তুমি আমাকে মেনে নিতে পারবা সেদিন একসাথে ঘুমাব।
আমিঃসেটা সম্ভব নই।
শুয়ে থাকলাম।
সিমির ডুকরে কান্নার শব্দ পাচ্ছি।
আমার মাথাও ব্যাথা করছে।
অনেকক্ষন ধরে এপাশ ওপাশ করছি তবুও ঘুম আসছে না।
সিমিঃএখনো ঘুমাও নি কেন?
আমিঃমাথাব্যাথা করছে। ঘুম আসছে না।
সিমি আমার কাছে এলো।
সিমির মুখ এখন খোলা।
তবুও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিনা।
আমার রুমের ড্রিম লাইটের আলো খুব কম।
সিমি আমার মাথা টিপে দিচ্ছে।
অনেক ভাল লাগছে।
তবুও ঘুম আসেনা।
আমিঃঘুম আসছে না।
সিমি কিছু বললো না।
আমার পাশে শুয়ে আমাকে তার বুকে নিয়ে নিল।
আমি কি বলব বুঝতে পারছি না।
আমিঃকি করছো?
সিমিঃচোখ বন্ধ করে ঘুমাও।
সিমি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আমি কিছু বলতে পারছি না।
পরম আবেশে চোখ দুটো বন্ধ করে রেখেছি।
আমি না চাইতেও সিমিকে জড়িয়ে ধরে নিয়েছি ।
কোলবালিশ যেভাবে ধরে সেভাবে আছি।
কখন ঘুমিয়েছি মনে নেই।
মাঝরাতে সিমি তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার জন্য উঠেছে।
সিমি বিছানা থেকে নামতে পারছে না।
চলবে...

Post a Comment

Previous Post Next Post